পঞ্চগড়ে এ বছর শসার ফলন ভালো হলেও হঠাৎ দাম কমে যাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। যেই শসা কিছুদিন আগেও পাইকাররা ক্ষেত থেকে ৪০-৪৫ টাকা কেজি দরে কিনেছেন এখন তারা এই খাদ্য পণ্যটি ২ টাকা কেজি দরেও কিনতে রাজি হচ্ছেন না।
ব্যবসায়ীদের দাবি, চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হওয়ায় এবং ও মোকামে দাম না থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর শসার আবাদ হয়। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে অন্য জেলাতেও সরবরাহ করা হয় এখানকার শসা। বিগত কয়েক বছর ধরে স্থানীয় পাইকাররা কৃষকের ক্ষেত থেকেই শসা কিনে বিভিন্ন জেলায় পাঠান। কিন্তু এ বছর ন্যায্য দাম না পেয়ে লোকসানের আশঙ্কা করছেন চাষিরা।
সোমবার (১৮ এপ্রিল) সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের বনগ্রামে কথা হয় শসা চাষি মতিয়ার রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এ বছর আমি এক একর জমিতে শসার আবাদ করেছি। খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। এখন যে দাম, তাতে শ্রমিকদের মুজুরি খরচই উঠছে না।’
একই ইউনিয়নের অন্তরভুক্ত গোয়ালপাড়া গ্রামের চাষি আলাউদ্দীন বলেন, ‘৫০ কেজি ওজনের একেকটি শসার বস্তার দাম ১০০ টাকাও মিলছে না। শসার ফলন ভালো হয়েছে ঠিকই। কিন্তু ৬ বস্তা বিক্রি করেও এক কেজি গরুর মাংস কেনার সাধ্য নেই আমাদের।‘
মনির হোসেন নামের অপর এক কৃষক বলেন, ‘প্রতি বছর রমজান মাসে শসার দাম চড়া থাকলেও এ বছর পুরোই ভিন্ন।‘
ওমর ফারুক, আজিজুল ইসলাম, হাসিবুল ইসলামসহ কয়েকজন পাইকারি শসা ব্যবসায়ী বলেন, কয়েকদিন আগেই আমরা ক্ষেত থেকে প্রতি কেজি শসা ৪৫ টাকা দরে কিনেছি। সেই শসা এখন দুই টাকা করে কিনতে হচ্ছে। কারণ হিসেবে তারা বলেন, তখন শসার চাহিদা বেশি ছিল। কিন্তু এখন চাহিদা কম। মোকামে দাম বাড়লে কৃষকেরাও ভালো দাম পেতো।
পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার সাদেক বলেন, ‘গত বছর এ জেলায় ২৬৫ হেক্টর জমিতে শসার আবাদ হয়েছিলো। এ বছর তা কমে এসেছে ২১০ হেক্টরে। শসার দাম হঠাৎ একেবারে কমে আসায় আগামী মৌসুমে চাষের পরিমাণ আরো কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।